প্রিয় বোনেরা, আমরা সবাই জানি মাসিক বা পিরিয়ড নারীদের জীবনের খুবই স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক একটি বিষয়। এটা কোনো লজ্জার নয়, বরং এটা একজন নারী হিসেবে আমাদের শরীরের নিয়মিত প্রক্রিয়ারই অংশ। তবে এই সময়টাতে আমাদের শরীর একটু বেশি সংবেদনশীল থাকে। তাই কিছু কাজ থেকে নিজেকে একটু বিরত রাখা ভালো – সেটা নিজের সুস্থতা ও আরামের জন্য।
![]() |
পিরিয়ডের সময় ৪টি মারাত্মক ভুল এড়িয়ে চলুন – সচেতন থাকুন, সুস্থ থাকুন |
পিরিয়ডের সময় এই ৪টি কাজ থেকে দূরে থাকুন – নিজের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন!
চলুন, বন্ধুর মতো গল্প করে জেনে নিই, পিরিয়ডের সময় কোন চারটি কাজ করা উচিত নয় – এবং কেন নয়।
১. ঠান্ডা পানি বা কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন
অনেকেই ঠান্ডা পানি বা কোল্ড ড্রিংক্স খেতে ভালোবাসেন, বিশেষ করে গরমের দিনে। কিন্তু পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে যদি আপনি ঠান্ডা পানীয় খান, তা হলে পেট ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। এতে সরাসরি ক্যান্সার বা টিউমার হয় – এমন কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই, তবে শরীরের অভ্যন্তরীণ ব্যথা বা অস্বস্তি বাড়তে পারে।
📌 ভালো অভ্যাস: হালকা গরম পানি খান বা নরমাল পানিতে লেবু মিশিয়ে পান করুন। শরীর হাইড্রেট থাকবে, মনও থাকবে চাঙা।
২. মাথায় শ্যাম্পু করা এড়িয়ে চলুন (বিশেষ করে ঠান্ডা পানি দিয়ে)
পিরিয়ডের সময় চুল ধুতে চাইলে সমস্যা নেই, তবে একদম ঠান্ডা পানি দিয়ে মাথা ধোয়া ঠিক নয়। কারণ এসময় অনেকের শরীর দুর্বল থাকে এবং ঠান্ডা পানি মাথার স্নায়ুকে প্রভাবিত করে মাথাব্যথা বা সর্দি-কাশির সমস্যা তৈরি করতে পারে।
📌 ভালো অভ্যাস: হালকা গরম পানি ব্যবহার করে চুল ধুতে পারেন, আর যদি মাথাব্যথা থাকে – তাহলে একদিন বাদ দিয়ে পরে শ্যাম্পু করুন।
৩. পিরিয়ডের সময় শশা বা অতিরিক্ত কাঁচা খাবার এড়িয়ে চলুন
শশা খুবই হেলদি একটা সবজি, তবে এটা ঠান্ডা প্রকৃতির। যাদের পেট ঠান্ডা জাতীয় খাবারে সেনসিটিভ, তাদের জন্য পিরিয়ড চলাকালীন শশা খাওয়া অস্বস্তিকর হতে পারে। তবে এটি খেলে বন্ধ্যাত্ব হবে – এমন কথা একেবারেই ভিত্তিহীন।
📌 ভালো অভ্যাস: পেট ঠিক থাকলে শশা বা ঠান্ডা ফল খেতে পারেন পরিমাণমতো, তবে যদি গ্যাস বা বদহজম হয়, তাহলে একটু বিরত থাকাই ভালো।
৪. শরীরে আঘাত লাগা থেকে সাবধান থাকুন
পিরিয়ডের সময় আমাদের জরায়ু (uterus) একটু নরম ও সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। তাই পেটের ওপর কোনো ধরনের চাপ, ধাক্কা বা আঘাত একেবারেই এড়ানো উচিত। এতে ভবিষ্যতে সমস্যা তৈরি হতে পারে।
📌 ভালো অভ্যাস: ভারী কিছু ওঠানো, পেটের ওপর চাপ বা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যায়াম থেকে দূরে থাকুন। হালকা হাঁটা বা হালকা স্ট্রেচিং ব্যায়াম করলে বরং আরাম পাবেন।
তাহলে এই সময় করণীয় কী কী?
- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন – প্রতি ৪-৬ ঘণ্টা পরপর ন্যাপকিন বদলান
- প্রচুর পানি পান করুন – শরীর হাইড্রেটেড রাখলে পেটব্যথা কমে
- আয়রন ও প্রোটিনযুক্ত খাবার খান – যেমন ডিম, ডাল, সবুজ শাক
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন – শরীরকে সময় দিন নিজেকে রিচার্জ করার
- নিজেকে ভালোবাসুন – নিজেকে সময় দিন, মুভি দেখুন, বই পড়ুন, আরাম করুন
ছোট্ট একটি বার্তা
প্রিয় মা, বোন, কন্যা, স্ত্রী – পিরিয়ড কোনো অপরাধ নয়, লজ্জারও কিছু নয়। এটা নারী জীবনের সৌন্দর্যের অংশ। তাই ভয় নয়, সচেতনতা ও ভালোবাসা দিয়েই এই সময়টাকে সহজ করে তুলুন। নিজেও সচেতন হোন, অন্যদেরও সচেতন করুন।
👩👧 এই লেখাটি আপনি আপনার প্রিয় নারী সদস্যদের সঙ্গে শেয়ার করুন – যেন তারা নিজেকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারে এবং সঠিকভাবে যত্ন নিতে পারে।